চলুন ঘুরে আসি শান্তিনিকেতন-তারাপীঠ-বক্রেশ্বর থেকে
1 min read
শান্তিনিকেতন-তারাপীঠ-বক্রেশ্বর
শান্তিনিকেতন-তারাপীঠ-বক্রেশ্বর
সময় পেলেই ভ্রমণপিপাসুরা ঘুরতে বেড়িয়ে পড়ে। তাদের ডেস্টিনেশন যেন অচিনপুর। সেই অচিনপুরে যেতে কার না ইচ্ছে করে বলুন তো? প্রত্যকেই তাই ছুটির প্রত্যাশী। কিছুদিনের ছুটি পেলেই তাই মন একটু উড়ুউড়ু করে। আর তা যদি কাছেপিঠেই স্বর্গের মত কোথাও যাওয়ার জায়গা পাওয়া যায়, তবে তো কথাই নেই। এই কড়া দিনমাফিক কাজের জীবনে ছুটি তাই অক্সিজেনের মতো। মানুষ সারা সপ্তাহ অপেক্ষা করে শনি রবিবারের জন্য।আর যদি ক্যালেন্ডারে এমন পাওয়া যায়, যে শনি রবিবারের সাথে সোম বা শুক্রও ছুটি, তবে তো সোনায় সোহাগা। এমন ছুটির খোঁজেই তো মানুষ অপেক্ষা করে বসে থাকে।

পশ্চিমবঙ্গেই এমন জায়গা আছে যেখানে দু-তিন দিনের ছুটিতে অসাধারণ একটা ট্যুর করা যায়। তেমনই এক জায়গা হল বীরভূম। বীরভূমের তিন জায়গা একসাথে আপনারা ট্যুর প্ল্যান করতে পারেন। এবং দু-তিন দিনের ছোট্ট ছুটি বীরভূম ঘুরে আসার জন্য আদর্শ। বীরভূমের তিনটি জায়গা আজকের ডেস্টিনেশন। তারা হল, শান্তিনিকেতন, তারাপীঠ এবং বক্রেশ্বর।
প্রথমেই আপনারা রামপুরহাট এক্সপ্রেস, বিশ্বভারতী প্যাসেঞ্জার অথবা কবিগুরু এক্সপ্রেস ধরে পৌঁছে যান বোলপুর। সেই দিন শান্তিনিকেতন দেখে নিন। শান্তিনিকেতনে ঘোরার জায়গা অনেক। বিশ্বভারতী ঘুরে দেখতেই আপনার গোটা একটা দিন কেটে যাবে। সেখানে দেখবেন বিশ্ব ভারতী মিউজিয়াম, দেহলী, তিন পাহাড়, তালধ্বজ, উপাসনা মন্দির, ছাতিমতলা, নতুন বাড়ি, শালবীথি, আম্রকুঞ্জ ইত্যাদি। দইআলার থেকে কিনে নেন টকদই আর মিষ্টি দইয়ের ভাঁড়, শালপাতার চামচ দিয়ে দই খেতে খেতে ঘুরে দেখুন বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি। বিকেলে দেখুন শনিবারের হাট অথবা সোনাঝুড়ির মেলা, সেখানের বাউলের গান আর আদিবাসী নৃত্য আপনার মন কাড়বেই। শনিবারের হাট থেকে কিনে নিতে পারেন হ্যান্ডিক্রাফটস আর শাড়ি। এছাড়াও যেতে পারেন কোপাই নদীর ধার আর সৃজনী শিল্পগ্রামে।
পরের দিন ট্রেনে করে অথবা ভাড়া গাড়ি করে চলে যান তারাপীঠে। সেখানে দিয়ে আসুন মায়ের পূজো। বলা হয় তারাপীঠের মাকালী না ডাকলে সেখানে নাকি যাওয়া যায় না, আর আমরা তো আপনার জন্য তৈরি করে দিচ্ছি সেই সুযোগ। পূজো দিয়ে এসে বিকেলে দেখে নিন লোকাল মার্কেট। বীরভূম বর্ধমানের কাছাকাছি বলে এখানকার ল্যাংচাও খুব জনপ্রিয় খাবার। চেখে দেখুন ল্যাংচা। তারপর সন্ধ্যে বেলায় রওনা দিন গাড়ি ভাড়া করে বক্রেশ্বরের উদ্দেশ্যে। বক্রেশ্বর নামটাই এসেছে ভগবান শিবের নাম অনুসারে। তবে এই জায়গার মূল আকর্ষণ হল এখানে থাকা দশটি উষ্ণ প্রস্রবণ। এখানে এই উষ্ণ প্রস্রবণগুলি তৈরি হয়েছে একেবারেই প্রাকৃতিক কারণে। এবং সবচেয়ে বড় কথা এটি একান্ন পীঠের একটি সতীপীঠ। এখানে থাকা দশটি উষ্ণ প্রস্রবণের নামগুলি হলঃ পাপহরা গঙ্গা, বৈতরণী গঙ্গা, খর কুণ্ড, ভৈরব কুণ্ড, অগ্নি কুণ্ড, দুধ কুণ্ড, সূর্য কুণ্ড, শ্বেত কুণ্ড, ব্রহ্ম কুণ্ড এবং অমৃত কুণ্ড। এছাড়াও মূল মন্দির বাদ দিয়েও এখানে রয়েছে মা ভবতারিণী মন্দিরম মহিষাসুর মর্দিনী মন্দির এবং ভৈরবনাথ মন্দির। আপনারা এই মন্দির এবং মূল মন্দিরে পুজো দিতে পারেন। উষ্ণ প্রস্রবণ গুলিতে ট্যুরিস্টরা চাল ফেলে দেখে সেগুলি ফুটছে। আপনারাও প্রত্যক্ষ করতে পারেন সেসব। সন্ধ্যেয় ঘুরে দেখতে পারেন আসেপাশের গ্রাম জনবসতি এবং মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বাজার। কিনে ফেলতে পারেন বিবিধ জিনিস।
মাতৃভক্তি ও নস্টালজিয়া মেশানো এই ট্রিপটি ঘুরে আসুন তবে, আর দেরী কেন? ছোট একটা ছুটি দেখে ঘুরেই আসুন…।