ঘুরে আসতে চান ইন্দ্রলোক থাকে তাহলে চলুন ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স থেকে
1 min read
valley of flowers
ঘুরে আসতে চান ইন্দ্রলোক থাকে তাহলে চলুন ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স থেকে
উত্তরাখণ্ডে এমন এমন জায়গা বা দর্শনীয় স্থান আছে, আপনার সারাজীবন লেগে যাবে তা দেখতে দেখতে। তাই উত্তরাখণ্ডকে এককথায় একটা ছোট পৃথিবী বলা যেতে পারে। হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের এটি একটি ভাগ। তাই হিমালয়কে আবিষ্কার করতে গেলে আপনাকে উত্তরাখণ্ড ভ্রমণ করতেই হবে। সুইতজারল্যান্ড বলুন আর স্কটল্যান্ড, এইসব জায়গা মিথ্যে হয়ে যাবে উত্তরাখণ্ডের কাছে। তাই জীবনে একবার হলেও উত্তরাখণ্ড ভ্রমণ করা সব ভারতবাসীদেরই উচিত।

উত্তরাখণ্ডের এমন এক জায়গা ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স যেখানে গেলে আপনি জীবনের সব কষ্ট ভুলে যাবেন, এমনটা জোড় দিয়ে বলতে পারি। এটি হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এক উপত্যকা। এর অসামান্য সৌন্দর্যের জন্য এটি সর্বজন বিদিত। এখানের অলপাইন ফুল ও অন্যান্য বিপন্ন জাতির উদ্ভিদের জন্য এই স্থান খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কালে কালে। একইসাথে এখানে বিভিন্ন দুর্লভ ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী দেখা যায়। যেমন- এশিয়ান কালো ভাল্লুক, বাদামি ভাল্লুক, নীল ভেড়া, লাল শিয়াল, মাস্ক ডিয়ার, তুষার চিতা এবং প্রভৃতি। এই উপত্যকার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য পূর্বে নন্দা দেবী ন্যাশানাল পার্কের বন্য পার্বত্য অঞ্চলের প্রকৃতিকে যেন পূর্ণ করে তোলে। এটি উত্তর চামোলিতে অবস্থিত। এই উপত্যকাতে আরেকটি দেখার বিষয় হল পাখি। এখানে হিমালয়ান মোনাল ফিজেন্ট সহ কিছু হাই অলটিচিউডের পাখি রয়েছে যা অন্য কোথাও দেখতে পাওয়া যাবে না, এমনই দুর্লভ তারা। এই উপত্যকার কথা হিন্দু ধর্মীয় সাহিত্যে বারবার উঠে এসেছে। বহু উদ্ভিদবিদ এই স্থান নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করে চলেছেন। ভারতীয় যোগীদের আধাত্ম সাধনার জন্য এই স্থানটি খুবই জনপ্রিয় ছিল প্রাচীন কাল থেকেই। বর্তমানে এটি বিশ্ব দ্বারা সমদৃত একটি উপত্যকা হয়ে উঠেছে।
সবচেয়ে বড় কথা এই সম্পূর্ণ উপত্যকাটিই প্রকৃতি দ্বারা নির্মিত, কোথাও কৃত্রিমতা বা মানুষের হাত নেই। এটি মে-জুন মাস থেকে অক্টোবর-নভেম্বর অবধি খোলা থাকে। এখানে পৌঁছনোর জন্য হরিদ্বার, ঋষিকেশ বা দেরাদুনে পৌঁছে সেখান থেকে বাস বা গাড়ি ভাড়া করে আপনাকে যেতে হবে যোশীমঠ। সেখান থেকে জিপে করে গোবিন্দঘাটে পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে ১২ কিমি মত ট্রেক করে যেতে হবে ঘানগড়িয়া গ্রামে। এখানে ট্রেকিং না করলেও আপনি ঘোড়া হায়ার করতে পারেন। সেখান থেকে ট্রেকিং করে পরের দিন আপনাকে যেতে হবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে। চারপাশে বিভিন্ন দুর্লভ ও অসম্ভব সুন্দর প্রজাতির ফুল দেখলে আপনার আর ফিরে আসতে ইচ্ছে করবে না।
এবারে আসা যাক ট্যুর বাজেট প্রসঙ্গে। কারণ বাজেট টা খুব ইম্পর্ট্যান্ট ঘুরতে যাওয়ার জন্য। কোথাও কত খরচ হতে পারে এটা না জানলে ঘুরতে গিয়ে মুশকিলে পড়তে হতে পারে। তাই আগের থেকেই খরচের ব্যপারে একটু প্ল্যান করে নিতে হবে। দুজনের জন্য হোটেল খরচ হতে পারে দুহাজার টাকার মত। খাওয়ার খরচও দুজনের জন্য হয়ে যাবে দুহাজার টাকা প্রায়। গাড়ি ভাড়া মিলিয়ে পুরো ট্রিপ টায় মাথাপিছু খরচ পড়বে পাঁচ হাজার টাকার মত। কিন্তু এখানে ঘুরতে গেলে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, এখানে কাছে ছাতা রাখতে হবে, কারণ আবহাওয়া যখন তখন খারাপ হতে পারে। সঙ্গে রাখতে হবে শুকনো খাবারও। কারণ, এখানে চারপাশে কোনও খাবারের দোকান নেই।
নিশ্চই মোটামুটি একটা আন্দাজ পাওয়া গিয়েছে কিভাবে কোন সময় ঘুরতে যেতে হবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে। চলুন ঘুরেই আসি পৃথিবীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান ফুলের উপত্যকায়…।