ভারতের সেরা তুষার ট্রেক – কেদারকান্থা
1 min read
কেদারকান্থা
ভারতের সেরা তুষার ট্রেক – কেদারকান্থা
মানুষ অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করে। নিত্য নতুন স্থানকে আবিষ্কার করা মানুষের আদিমতম অভ্যেস। আর এই প্রবৃত্তি প্রকৃতি তাকে দান করেছে। মানুষ সারা জীবন যেন নতুন কিছু আবিষ্কারের জন্যই লাগিয়ে দেয়। তা কোনও জিনিস হোক, সাহিত্য হোক, শিল্প হোক বা ভ্রমণ। কিন্তু মানুষের একঘেয়েমী পছন্দ নয়, তারা খোঁজে বৈচিত্র। মানুষের এই বিচিত্র অভ্যেস আমাদের সবার জানা। বোধহয় এই খবর প্রকৃতির কাছেও আছে। তাই প্রকৃতি তার রূপের ডালি সাজিয়ে বসে থাকে আমাদের জন্য, মানুষের জন্য। কখন কিভাবে এই রূপ আপনার চোখের সামনে চলে আসবে তা কেউ কি জানে?

তুষার
উত্তরাখণ্ড এমনই একটি জায়গা যেখানে আবিষ্কার করার মত অনেক কিছু আছে, আছে অ্যাডভেঞ্চারের ভরপুর উপাদান। তা সে ক্যাম্পিং হোক বা ট্রেকিং। আপনারা চাইলে সারা জীবনেও সম্পূর্ণ উত্তরাখণ্ডের স্বাদ গ্রহণ শেষ করতে পারবেন না। তাই যখনই সুযোগ পাবেন উত্তরাখণ্ডের প্রকৃতির কাছাকাছি চলে যান। স্বর্গের মত সুন্দর উত্তরাখণ্ড তাই পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি ট্যুরিস্ট স্পট। এটি যেমন একাধারে ট্যুরিস্ট স্পট তেমন তীর্থস্থানও বটে। উত্তরাখণ্ডকে আবিষ্কার করার মত এমনও অনেক কিছু আছে যেখানে মানুষ এসে এখনও পৌঁছতে পারেনি। আর ট্রেক করার জন্য উত্তরাখণ্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে আউলি, জুনারগালি পাস, ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স ইত্যাদি ট্রেকিং ডেস্টিনেশন আছে। কিন্তু সর্বাধিক জনপ্রিয় স্থান হল কেদারকান্থ।

এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বারো হাজার পাঁচশ’ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত। এটি উত্তরকাশির গোবিন্দ ওয়াইল্ড লাইভ স্যাংকচুয়ারিতে অবস্থিত। কেদারকান্থ থেকে সর্বমোট ১৩টি পর্বতশৃঙ্গ দেখতে পাওয়া যায়। ট্রেকিং ছাড়াও কেদারকান্থ তুষারপাতের জন্যেও বিখ্যাত। এখানে তুষারপাত ডিসেম্বর মাসের মাঝ থেকে এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। সবথেকে বড় কথা, বলা হয় এই কেদারকান্থ থেকে যেই ক্যাম্পসাইট বিউটি দেখা যায়, অন্য কোনও শৃঙ্গ থেকে এত সৌন্দর্য পরিদর্শিত হয় না বললেই চলে। এখানের জুড়া-কা-তালাব সুবৃহৎ পাইন গাছ দিয়ে ঘেরা। এমন অপার্থিব সৌন্দর্য সারা পৃথিবীর মধ্যে কমই দেখা যাবে।

এবার দেখা যাক কিভাবে পৌঁছবেন কেদারকান্থ। দিল্লীতে পৌঁছে নন্দাদেবী এক্সপ্রেস ধরে দেরাদুন পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে মুসৌরী বাস স্টপে গিয়ে শাংক্রির বাস ধরে সেখানে পৌঁছতে হবে। সেখানে আপনি লজে বা হোমস্টেতে থেকে যেতে পারেন সেদিনের জন্য। এখান থেকেই আপনাকে লোকাল কোনও গাইড হায়ার করতে হবে। এখানেই আপনাকে ট্রেকিং যাবতীয় জিনিস সংগ্রহ করতে হবে। তবে কেদারকান্থের মতন খুব কম জায়গা আছে হিমালয়ের যেখানে শীতকালে ট্রেকিং করা যায়। যাই হোক, শাংক্রি থেকে আপনি আপনার ট্রেকিং শুরু করতে পারেন। শাংক্রি থেকে শুরু করে পুনরায় সেখানে ফিরে আসার সর্ব মোট দূরত্ব হল কুড়ি কিলোমিটার। দ্বিতীয় দিন আপনারা যাবেন জুড়া-কা-তালাব দেখতে। জুড়া-কা-তালাবের উত্তরে বিরাট ম্যাপেল গাছের বন আপনাদের মন কাড়বেই। এখান থেকে আপনারা ট্রেক করবেন কেদারকান্থ বেস পর্যন্ত। এখান থেকে পরের দিন আপনারা ট্রেক করবেন কেদারকান্থ পিক অবধি, যেখানে আছে হরগাঁও ক্যাম্প। সেখান থেকে পরের দিন আবার শাংক্রি পৌঁছতে হবে। এই ট্রেকিং করতে গিয়ে অনেক বাধা বিপত্তি, শারিরীক কষ্ট থাকলেও কেদারকান্থের ভুবন ভোলানো রূপ দেখলে আর কোনও কষ্ট থাকবে না।

ট্রেকিং করতে গেলে কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। সেগুলোর ব্যবস্থা আগে থেকে করে নেবেন। গরম জামা ছাড়াও ট্রেক করার জন্য স্পেশাল জুতো মজুত রাখতে হবে। এছাড়াও মজুত রাখতে হবে শুকনো খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ জল। ব্যস তাহলেই আপনি ট্রেকিং করার জন্য একদম রেডি। তাহলে চলুন ঘুরেই আসা যাক কেদারকান্থ…