কলকাতার ভয়ঙ্কর দশটি ভৌতিক স্থান
1 min read
Most Haunted
কলকাতার ভয়ঙ্কর দশটি ভৌতিক স্থান
পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই রহস্য রোমাঞ্চকে ভালোবাসে। পর্যটন তো শুধুই জানার ও চেনার খিদে। কিন্তু এই রহস্যময়তা মানুষকে আগামীকে দেখার সাহস যোগায়। তাই মানুষ রহস্যকে রোমাঞ্চকে খুঁজতে ভালোবাসে। সেই সমস্ত জটিলতার মধ্যে তারা যাওয়ার চেষ্টা করে, যেখানে সব মানুষ যেতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবে না।
আমাদের খোদ কলকাতাতেই সেই সমস্ত স্থান আছে যেখানে গেলেই রহস্যে রোমাঞ্চে আমাদের মন ভরে ওঠে। মানুষ অদ্ভুত ভাবেই হোক ভয় পেতে ভালোবাসে, ভয়ের চরম অবস্থাতে ভীত হওয়াতেই যেন তাদের পরিতৃপ্তি। ভূত কে দেখেছে? কিন্তু ভূতের বাজার কিন্তু রমরমা। যতটা না তাদের অস্তিত্বের জন্য, তার থেকে বেশি তার সম্ভাবনার জন্য। তাই আজ কথা বলবে কোলকাতার দশটি ভূতের আবাস স্থল নিয়ে।
১। ন্যাশেনাল লাইব্রেরিঃ ভূত নিয়ে ন্যাশেনাল লাইব্রেরির দুর্নাম আছে বহুদিন থেকে। এখানে নাকি চলে নানা ভূতুড়ে কার্যকলাপ। এটি নির্মান করে ছিলেন লর্ড মেটাকাফের। যারাই এখানে পড়াশোনা করতে যান তারাই অনুভব করেছেন ঘাড়ের কাছে কোনও অচেনা কিছুর উপস্থিতি। কেউ বা বলেন নির্জন দুপুরে লাইব্রেরির ভীতরে শোনা যায় পদচারণের আওয়াজ। বলা হয় লর্ড মেটাকাফেরের আত্মাই নাকি এখানে রাতবিরেতে ঘোরাফেরা করে।
২। নিমতলা মহাশ্মশানঃ কলকাতার এই ঘাটে প্রতিদিন বহু মানুষ তাদের আত্মীয়-পরিজনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। শোনা যায় অমাবস্যার রাতে নাকি অঘোরী তান্ত্রিকেরা এখানে সাধনা করতে আসেন। তার মৃতদেহের উপর বসে সাধনা করার সময় রক্তপানও করেন।
৩। হাওড়া ব্রিজঃ এই ব্রিজের ঘাট অন্য সব ভূতুড়ে স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। ফুলবাজারের পাশে থাকা এই ঘাটে প্রতিদিনই নাকি কিছু না কিছু ভূতুড়ে ঘটতে থাকে। যারা এখানে কাজ করে তারাই এই সব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তারা বলেন একজন মহিলাকে নাকি তারা সাদা শাড়ি পরে ঘুরতে দেখেছেন, কিংবা কোনও মহিলার নাকি সুরে কান্না শুনেছেন। স্থানীয় লোকেদের ধারণা গঙ্গাইয় ডুবে মারা যাওয়া আত্মারাই নাকি ঘুরে বেড়ায় এই ঘাটে।
৪। রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনঃ মেট্রো স্টেশনে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা নতুন নয়। কিন্তু বলা হয় রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনে নাকি অনেক সময় অনেক ছায়ামূর্তিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। সবই নাকি আত্মহনন করা সেই সব মানুষের আত্মা। যারা যারা স্টেশনে লাস্ট মেট্রো ধরতে যায়, তারাই এই ঘটনার সম্মুখীন হয় বলে জানা গিয়েছে।
৫। আকাশবানী ভবনঃ আকাশবানী ব্রিটিশ আমল থেকেই নাম করা ভবন কলকাতার। এখানে থাকা বিরাট বিরাট স্টুডিও, লম্বা করিডর মিশিয়ে এক মায়াবী পরিবেশে ভূতের অস্তিত্ব থাকাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এখানকার কর্মীরাই বলেন সেখানে নাকি ব্রিটিশ ও বাঙালি দুই রকমের ভূতের আন্দাজ টের পাওয়া যায়। তারা কেউ গান গেয়ে ওঠে কেউ বা সুরেলা যন্ত্র বাজায়।
৬। লোয়ার সার্কুলার রোড গোরস্থানঃ এইখানে ভূতের অস্তিত্ব থাকা আশ্চর্যের নয়, এবং এটি ভূতুড়ে বলে বেশ জনপ্রিয়ও। এখানের একটি কবর হল স্যর উইলিয়াম হের ম্যাকনুটেনের। এখনও নাকি সেই কবরের পাশ দিয়ে গেলে তাঁর আত্মার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।
৭। রাইটার্স বিল্ডিংঃ নবান্নের আগে এইখানেই সব মহকারণিক কাজকর্ম হত। তখনও এখানের সব ঘোরা খোলা হত না। সন্ধ্যে হলেই কেউ এখানে কাজ করতে চাইতেন না। এখনও এই জায়গা থেকে বিচ্ছিড়ি ভূতুড়ে সব আওয়াজ শোনা যায়।
৮। রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাবঃ ঘোড়া প্রতিযোগীতায় মুখরিত থাকে কলকাতা টার্ফ ক্লাব খ্যাত রেসকোর্স ময়দানটি। দিনের আলোইয় তেমন সমস্যা না হলেও রাতে নাকি এখানে ঘটে যায় অলৌকিক সব ঘটনা। কে বা কারা নাকি ঘোড়া নিয়ে ছুটে বেড়ায় এইখানে। বলা হয় জর্জ উইলিয়ামসের প্রিয় ঘোড়া পার্ল হোয়াইটকে নাকি শনিবার পূর্ণিমার রাতের আলোয় মাঠে চড়তে দেখা যায়।
৯। হেস্টিংস হাউজঃ হেস্টিংস হাউজ আমরা প্রায় সবাই চিনি। এটি আলিপুরের একটি পরিচিত স্থাপত্য। এখানে পূর্বে বাস করতেন গভর্নর। এখন এটি কলকাতা ইউনিভার্সিটির মহিলা কলেজ হিসেবেই পরিচিত। সেখানেই নাকি দিনে দুপুরে এক ব্রিটিশ ব্যক্তি ও কমবয়সী ছেলেকে প্রায়ই দেখা যায়।
১০। পুতুলবাড়িঃ কলকাতায় কিছু কিছু রোমান স্থাপত্য আছে, তাদের মধ্যে এটি একটি। এটি আহেরিটোলায় অবস্থিত। বলা হয় এখানে বসবাসকারি এক বিত্তশালী জমিদার নাকি মহিলাদের উপর অত্যাচার চালাতেন নির্মম ভাবে। সেই সব মহিলাদের ভূতই নাকি এখানে পুতুল রূপে ঘুরে বেড়ায়।
সন্ধ্যেবেলার পর সাহস করে ঘুরে আসুন এই সমস্ত স্থান থেকে, আর জমিয়ে উপভোগ করুন রহস্য রোমাঞ্চে ভরা ভয়…।