আগের শ্যামদেশ আজকের সুন্দরি থাইল্যান্ড
1 min read
bangkok-thailand
মানুষ কিসের টানে ঘুরে বেড়ায় দেশ বিদেশ তা মানুষই জানে। তার নতুন কিছু জানার নতুন কিছু শেখার ইচ্ছে বরাবরই। আগুন আবিষ্কারের পর মানুষের জ্ঞানের ইচ্ছে যেন প্রসারিত হচ্ছে দিনে দিনে। আর ভ্রমণ তো মানুষ পাখিদের থেকে আয়ত্ত করেছে। পাখিদের পরিযায়ী স্বভাবের মত মানুষও তার স্থান পালটায়। তার ভ্রমণ যেন পাখিদের অভ্যাসের সামিল। ভারতবাসীরা আজকাল শুধু ভারত ভ্রমণ নয়, ভারতের প্রতিবেশি দেশ গুলোরও পরিভ্রমণ করে বেড়ায়। তার বিদেশকে দেখার এই ইচ্ছে যেন দিনদিন বেড়ে চলছে। আজকের ডেস্টিনেশন তাই ভারতের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড।

থাইল্যান্ডকে দেশ না বলে রাষ্ট্র বলা ভালো। এর বৃহত্তম শহর ও রাজধানীর নাম ব্যাংকক। পূর্বে একে শ্যামদেশ নামে ডাকা হত। কিন্তু ১৯৪৯ সাল থেকে এর নাম বদলে থাইল্যান্ড রাখা হয়। থাইল্যান্ডের মধ্যভাগে রয়েছে একটি বিস্তীর্ণ উর্বর সমভূমি। এই সমভূমির মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান নদী চাও ফ্রায়া এবং এর শাখানদী এবং উপনদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে। এর পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে পাহাড় ও মালভূমি। পশ্চিমের পর্বতশ্রেণী দক্ষিণ দিকে মালয় উপদ্বীপে প্রসারিত হয়েছে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর ব্যাংকক চাও ফ্রায়া নদীর মোহনায় থাইল্যান্ড উপসাগরের তীরে অবস্থিত। থাইল্যান্ডের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ট থাই জাতির মানুষ। এরা প্রায় সবাই থেরবাদী বৌদ্ধধর্ম পালন করে। থাইল্যান্ডে বসবাসকারী অন্য জাতির মধ্যে আছে চীনা, মালয় ও আদিবাসী পাহাড়ি জাতি, যেমন মং ও কারেন। থাইল্যান্ডের পরিশীলিত ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নৃত্য এবং লোকশিল্প বিখ্যাত। থাইল্যান্ড এশিয়া থেকে মালেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে যাওয়ার একমাত্র পথ নিয়ন্ত্রণ করে।

বিদেশের গন্ধ গায়ে মেখে থাইল্যান্ড তার অপরূপ সাজানো গোছানো শহর মনোরম সমুদ্র তট, নীল জল, রঙীন আন্ডারওয়াটার লাইফ, রিচ বুদ্ধিস্ট কালচার, বর্ণময় নাইট লাইফ নিয়ে অপেক্ষা করে রয়েছে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত থাইল্যান্ডে কিভাবে ভ্রমণে যাবেন নীচে তার বিস্তারিত তথ্য দেওয়া রয়েছে। আমরা এখানে সম্পূর্ণ ভ্রমণকে আট দিনে ভাগ করে নেব। কলকাতা থেকে বিমানে ক্রাবি পৌঁছে প্রথম দিন দেখে নিন আও নাং বিচ। তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে চলে যান রেইলে বিচে। রেইলে বিচে যেতে গেলে আপনাকে ভাড়া করতে হবে বোট। রেইলে বিচ থেকে ফিরে আপনারা আও নাং সমুদ্র তটে দেখে নিন সূর্যাস্ত। সন্ধ্যেতে ঘুরে দেখে নিন ক্রাবির স্থানীয় বাজার। এই বাজার থাইফুডের স্বর্গের মত। সেখানে ডিনার সেরে নিয়ে আও নাং-এ করে ফেলুন রাত্রিযাপন। পরের দিন কোনও এজেন্সী হায়ার করে ঘুরে ফেলুন আশপাশের দ্বীপ গুলি। স্পিড বোটে করে চলে যান হং লেগুনে। এছাড়া যেতে পারেন পাকবিয়া, লাডিং আইল্যান্ডে। তবে সেদিনের মূল গন্তব্য হবে হং আইল্যান্ড। এখানে আপনি চাইলে স্নরকেলিং করতে পারেন। এই দ্বীপটা একটু ঘুরে ফিরে রাতে চলে যান আও নাং দ্বীপে। পরের দিন দেখুন কো ফি ফি আইল্যান্ড। সেখানেই দিনটায় থাকার জন্য নিয়ে নিন হোটেল। তারপর বেরিয়ে দেখে নিন কো লাদেম দ্বীপ, টন সাই বিচ। এখানে চাইলে আপনি স্নরকেলিং ও স্কুবা করতে পারেন। এরপর যেতে পারেন ফি ফি ভিউ পয়েন্টে। ঘুরে দেখুন ফিফির নাইট মার্কেট। আপনি যদি পার্টি করতে ভালো লাগে তাহলে রাতে যেতে পারেন ফিফির বিচ পার্টিতে। পরের দিন ঘুরুন মাংকি দ্বীপ, ফি লে বে লেগুন, ব্যাম্বু আইল্যান্ড, মায়া বে, মসকিউটো আইল্যান্ড ইত্যাদি জায়গায়। পরের দিন যান ফুকেটে। সেখানে গিয়ে দেখুন পাটং বিচ। এখানেই দেখে নিন বিশ্ব বিখ্যাত ডলফিন শো। পরের দিন ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়ুন কাটা বিচ, কারন বিচ, কারন ভিউ পয়েন্ট, রাওয়াই বিচ, বিগ বুদ্ধ পয়েন্ট, শালং মন্দির ইত্যাদি দেখতে। দেখা হলে বাস বা বিমানে চলে যান ব্যাংককে। পরের দিন সারাদিন ব্যাংকক ঘুরে দেখুন। তারপর দিন যান দামনোয়েন সাদুয়াক ফ্লোটিং মার্কেটে। এরপর যান মেকং রেলওয়ে স্টেশনে। এরপর ব্যাংককে ফিরে কিছু শপিং মল ঘুরে দেখুন। পরের দিন বিমানে ফিরে আসুন কলকাতায়।
নিশ্চই এক্ষুণি ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে থাইল্যান্ডে? তাহলে আর দেরী কিসের? ছুটি খুঁজে নিয়ে বেরিয়ে যান শ্যামদেশের উদ্দেশ্যে…